দক্ষিণবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সমাজে যখন অসততা ও প্রতারণার ঘটনা প্রায়শই শিরোনামে আসে, তখন এক নিঃস্বার্থ ও নৈতিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নতুন গতি পত্রিকার সাংবাদিক ও মামুন ন্যাশনাল স্কুলের প্রাক্তনী ইলিয়াস মল্লিক।
গতকাল রাতে ঘটে যাওয়া একটি ছোট্ট ঘটনা আজ মানুষের মনে বড় এক শিক্ষা দিয়ে গেল — “সততা এখনও সমাজে বেঁচে আছে।”
ঘটনা অনুযায়ী, গতকাল রাতে ইলিয়াস মল্লিক হাওড়ার এক নামী সোনার দোকান তিরুপতি জুয়েলার্স–এ যান একটি আংটি কেনার উদ্দেশ্যে। দোকান থেকে আংটি কেনার পর যথারীতি তিনি বিল পরিশোধ করে প্যাকেট হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
কিন্তু বাড়ি ফিরে যখন প্যাকেট খুললেন, তখনই তিনি বিস্ময়ে লক্ষ্য করেন — আংটির সঙ্গে একটি কাগজে মোড়ানো অতিরিক্ত সোনার টুকরো রয়েছে।
মুহূর্তেই তিনি বুঝতে পারেন এটি দোকানের ভুলে তার ব্যাগে চলে এসেছে। অনেকেই হয়তো এমন অবস্থায় বিষয়টি চুপচাপ গোপন রাখতেন, কিন্তু ইলিয়াস মল্লিকের বিবেক ও ঈমান সেটি অনুমতি দিল না।
তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিলের নম্বর দেখে দোকানে ফোন করার চেষ্টা করেন, কিন্তু যোগাযোগ না হওয়ায় পরদিন সকালে নিজে উদ্যোগ নিয়ে দোকানে উপস্থিত হন।
দোকানে গিয়ে তিনি সেই সোনার টুকরোটি দোকানের প্রতিনিধি অনুপম মাঝির হাতে তুলে দেন এবং জানান,
“আমি এটা ফেরত দিতে এসেছি আল্লাহর ভয়ে। এই সোনার টুকরো আমার নয়। এটা আমার কাছে আমানত ছিল, আর আমানত ফেরত দেওয়া আমার কর্তব্য ও দায়িত্ব।”
তিরুপতি জুয়েলার্স–এর প্রতিনিধি অনুপম মাধ্যি (মাঝি) ইলিয়াস মল্লিকের এই সততা ও নৈতিকতার প্রশংসা করে বলেন,
“আজকের দিনে এমন মানুষ সত্যিই বিরল। উনি যেভাবে দ্রুত বিষয়টি জানিয়ে নিজে এসে ফেরত দিলেন, তা আমাদের গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।”
ইলিয়াস মল্লিক জানান, এই ঘটনার একটি ভিডিও তিনি সংরক্ষণ করেছেন একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে। তার ভাষায়,
“আমি চাই আমার পুত্র বড় হয়ে যেন এই ভিডিও দেখে শিক্ষা নেয় যে, তার বাবা কখনও অসৎ উপায়ে উপার্জন করেননি। আমি চাই সে জানুক — সৎ পথে থাকা মানেই আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচা।”
তিনি আরও বলেন,
“আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক ও অর্থহীন ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু ভালো কাজ, সৎ কাজের গল্পগুলো কোথাও দেখা যায় না। আমি চাই সমাজে যেন এই ধরনের কাজ প্রচারিত হয়, যেন সবাই সততার গুরুত্ব বোঝে।”
এই ঘটনার পর স্থানীয় মহলে ও সামাজিক মাধ্যমে ইলিয়াস মল্লিকের এই মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন —
“এমন মানুষই সমাজের প্রকৃত সম্পদ। সততা এখনও মরে যায়নি, শুধু প্রচারের অপেক্ষা।”
এই ঘটনাটি প্রমাণ করে দিল — অর্থ, অবস্থান, ক্ষমতা নয় — একজন মানুষের আন্তরিকতা ও নৈতিকতাই তার প্রকৃত পরিচয়।
সাংবাদিক ইলিয়াস মল্লিকের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সমাজে সততা ও মানবতার এক নতুন বার্তা বয়ে আনল।





















