দক্ষিণবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়া থেকে অবশেষে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু করল ইজ়রায়েল। শুক্রবার গাজ়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইজ়রায়েলের সেনা সীমান্তের দিকে সরতে শুরু করেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অনেকে দীর্ঘ দিন পর বাড়ি ফিরছেন। বাড়িটি অক্ষত আছে দেখে কেউ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন, কেউ আবার ধ্বংসস্তূপ দেখে হাহাকার করছেন। শুক্রবার ভোরে ইজ়রায়েল সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি অনুমোদন করেছে। বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ স্থগিত হবে এবং পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইজ়রায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এর পরেই বাহিনী সরতে শুরু করেছে বলে খবর।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনিসে কিছু ইজ়রায়েলি সেনা পূর্ব সীমান্তের দিকে এগিয়েছে। নুসেইরাট ক্যাম্প থেকেই কয়েক জন সেনা পূর্বে ইজ়রায়েল সীমান্তের দিকে চলে গিয়েছে। তবে এখনও অনেক জায়গায় ইজ়রায়েলি সেনা রয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত ভাবে গুলির শব্দ, বোমার শব্দ শোনা যাচ্ছে। ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলঘেঁষা রাস্তা থেকেও সেনা সরছে।
বহু মানুষ ঘরে ফিরতে চেয়ে সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছেছেন। কিন্তু আদৌ যুদ্ধ থেমেছে কি না, তাঁরা নিশ্চিত নন। অনেকে ভয় পাচ্ছেন। গোলাগুলির শব্দ এখনও পুরোপুরি বন্ধ না-হওয়ায় সংশয় আরও বেড়েছে।
গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর জন্য ২০ দফা প্রস্তাব পরিকল্পনা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং হামাসকে দেখানো হয়েছিল। যুযুধান দুই পক্ষই ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রথম দফার শর্তে রাজি হয়েছে। পণবন্দিদের ইজ়রায়েলে ফেরানোর পরিবর্তে নেতানিয়াহু মুক্তি দেবেন ইজ়রায়েলের জেলে বন্দি প্যালেস্টাইনিদের। এ ছাড়া, গাজ়া থেকে সেনাও প্রত্যাহার করে নেবেন। আপাতত এই চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে।
ট্রাম্পের শর্ত মেনে নিলেও সম্পূর্ণ প্রস্তাবে এখনও রাজি হয়নি হামাস। ফলে এখনও জট পুরো কাটেনি। ২০২৩ সাল থেকে গাজ়ায় যে যুদ্ধ চলছে, তাতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ইজ়রায়েলের নীতির কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ায় ত্রাণ পৌঁছোয়নি দীর্ঘ দিন। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু মানুষ না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ইজ়রায়েলের দিকে ধেয়ে এসেছে সমালোচনা। দীর্ঘমেয়াদি এই বিতর্কে কি আদৌ ইতি টানতে পারলেন ট্রাম্প? সে দিকেই আপাতত চোখ গোটা বিশ্বের।
























